মোকলেচুর রহমানঃ খুলনার দাকোপ উপজেলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে; এতে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় বটবুনিয়া বাজারের পাশে হরিসভা মন্দির এলাকার বেড়িবাঁধের প্রায় ২৫ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। উচ্চ জোয়ারের চাপে মুহূর্তেই ঢাকি নদীসংলগ্ন বাঁধ ভেঙে যায়। আগে থেকে বেড়িবাঁধের জায়গাটি বেশ দুর্বল থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা গুরুত্ব দেয়নি।”এতে উত্তর কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, নিশানখালী ও আড়াখালী গ্রামের অনেক ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, পুকুর ও তিন হাজার বিঘা জমির আমন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।ইউপি চেয়ারম্যান জালাল বলেন, “বাঁধ আটকাতে না পারলে দক্ষিণ কামিনীবাসিয়া, ভাদলাবুনিয়া, মশামারী, গড়খালী ও কাকড়া বুনিয়াসহ প্রায় গোটা ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রায়ই স্থানীয়রা ক্ষতির মুখে পড়েন। বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া জায়গা এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ কাজ করছেন বলে জানান চেয়ারম্যান।দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমত হোসেন বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৩০ট পরিবারের মাঝে শুকনো চিড়া, গুড়, চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।”এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো খুলনার পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, “বটবুনিয়া হরিসভা মন্দির এলাকার বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশে আগে থেকেই জিও টিউব দেওয়া ছিল। তবে তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় উচ্চ জোয়ারের চাপে ২৫ মিটারের মত জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়।”তিনি বলেন, “নতুন করে ‘জরুরি পরিস্থিতি’র সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, দ্রুত বাঁধটি মেরামত হয়ে যাবে।”পাউবো জানায়, আগে দাকোপের ৩২ ও ৩৩ নম্বর পোল্ডারে বিশ্বব্যাংকের ঋণে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এটি বাস্তবায়ন করেছে। এ ছাড়া ৩১ নম্বর পোল্ডারে জাইকার অর্থায়নে প্রায় ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন হাজার ৭৫০ মিটার স্থায়ী নদী শাসনের কাজ চলমান রয়েছে। দাকোপের নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৩১ নম্বর পোল্ডারের আওতায় পড়েছে পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন এবং চালনা পৌরসভা।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ