যশোরের চৌগাছায় ৫ বছর ধরে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে কুলাঙ্গার পিতাকে আটক করেছেন চৌগাছা থানা পুলিশ। ৫ জুলাই মঙ্গলবার গভীর রাতে ধর্ষিতা ওই মেয়ে পিতার বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। উপজেলার একটি ইউনিয়নের একটি গ্রামে গত ২৮ জুন সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন অভিযোগ কারী।

জানা যায়, নিজের ঔরসজাত সন্তানকে পাঁচ বছর ধরে ধর্ষণ করতেন পিতা মশিয়ার রহমান (৪৫)। ধর্ষণে সুবিধার জন্য মেয়েকে অল্প বয়সে গ্রামেই বিয়ে দেন। এরপর সেখানে থেকে বিয়ে বিচ্ছেদ করিয়ে আরেক জায়গায় বিয়ে দেন। পরে সেখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাড়ীতে রেখে নিজে ধর্ষণ করতেন। এক পর্যায়েঅতিষ্ট হয়ে মেয়েটি তার বোনকে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি নেন। তবুও মেটেনি মাদক ব্যবসায়ী কুলাঙ্গার ওই পিতার লালসা। সম্প্রতি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসলে মেয়েকে (১৮) আবারো জোর করে ধর্ষণ করে পিতা। এবারে মেয়ে সোজা চলে যান চৌগাছা থানায়। পিতার বিরুদ্ধে করেন ধর্ষণের অভিযোগ। থানা পুলিশ ওই পিতাকে আটকের পর তিনি স্বীকার করেন মেয়েকে ধর্ষণের কথা। মেয়ের করা ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে ওই পিতাকে।

ওই মেয়ে (১৮) লিখিত অভিযোগে জানান, মশিয়ার আমার জন্মদাতা পিতা। তার স্বভাব চরিত্র খুব খারাপ এবং সে পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। সে প্রায়ই আমাকেসহ আমার পরিবারের লোকজনদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। আমি সাবালিকা হওয়ার পর থেকেই তিনি আমাকে বিভিন্ন ধরনের খারাপ কথা বলতো এবং আমার দিকে কুদৃষ্টি ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতো। প্রতিবাদ করলে আমাকে গালিগালাজ, মারধরসহ বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করতো। ওই মেয়ে জানায়, তিনি আমার সম্মতি ছাড়াই প্রথমে একজন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে বিয়ে দেয়। পরে সেই বিয়ে বিচ্ছেদ করিয়ে অন্য জায়গায় আমাকে বিয়ে দেন। অনুমান ৫ বছর আগে থেকে (বাবা) বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ভয়ভীতি দেখাইয়া আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার যৌননিপীড়নসহ ধর্ষণ করে।

আমি ভয়ে বিষয়টি কারো কাছে প্রকাশ করিনি এবং তাকে খারাপ কাজ হতে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে আমি ও আমার ছোট বোন (১৬) বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি নিই। গত ২৬ জুন আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসি। এরপর গত ২৮ জুন মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে আমাদের গ্রামের বাড়ির আমার শয়নকক্ষে প্রবেশ করে পূর্বের ন্যায় আমাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। একইসাথে ঘটনা কারো সাথে বললে আমাকে খুন করে ফেলার হুমকি দেন। ঘটনার পর আমি মা, দাদি, চাচি, স্বামীসহ স্বজনদের জানায় করি। এরপর এই মামলা করলাম। এরআগে মঙ্গলবার মেয়েটি থানায় এসে তার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে পুলিশ ওই বাবাকে আটক করেন। পরে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মেয়েটির লিখিত অভিযোগটি এজহার হিসেবে আমলে নিয়ে মামলা নথিভুক্ত করেন।

থানায় আসা মেয়েটির মা জানান, বিষয়টি আমি আগে কখনওই জানতে পারিনি। স্থানীয়রা জানান, ওই মেয়েটির প্রথমে গ্রামে দুইটি বিয়ে হয়। সেখান থেকে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। সেখানেও দুটি বিয়ে করে সে। এরপর গ্রামে ফিরে নিজের মামাতো ভাইকে বিয়ে করে।

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যাক্তি প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি স্বীকার করেছেন। বাবাকে আটক করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ