আখাউড়ায় ক্লিনিকের নারীকে অপহরণের চেষ্টা, বাধা দেওয়াই সাংবাদিকসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত, বাবা ও ছেলে গ্রেফতার।
আখাউড়ায় ক্লিনিকের নারীকে অপহরণের চেষ্টা, বাধা দেওয়াই সাংবাদিকসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত, বাবা ও ছেলে গ্রেফতার।
লায়ন রাকেশ কুমার ঘোষ
( স্টাফ রিপোর্টার)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকের ভিজিট চাওয়ায় এক কর্মচারীকে অপহরণ করে তুলে নেওয়ার সময় প্রতিবাদ করলে জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পালের ওপর হামলা করেছেন দুর্বৃত্তরা। এসময় দুর্বৃত্তের হামলায় বিশ্বজিৎসহ পাঁচ জন আহত হন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার রাধানগরের দাসপাড়ায় অবস্থিত একটি বেসরকারিক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত বিশ্বজিৎ পাল উপজেলার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা। সে একটি জাতীয় দৈনিকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। এসময় সাংবাদিক বিশ্বজিৎকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন তার তুই চাচাতো ভাই আনন্দ পাল (২৮) ও প্রসেনজিৎ পাল (২৮)
উপজেলার দেবগ্রামের মাহফুজ ভূঁইয়ার ছেলে সুমন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিশ্বজিতের ওপর হামলা চালানো হয়।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে দেবগ্রামের বাসিন্দা সুমন ভূঁইয়া স্ত্রীসহ ছয় মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসক দেখাতে রাধানগরের দাসপাড়ার দি কমফোর্ট এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। ওই ক্লিনিকে থাকা চিকিৎসক কাজী মাজহারুল ইসলামের কাছে শিশু সন্তানকে নিয়ে যান সুমন। চিকিৎসক থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে চেম্বার থেকে বের হন সুমন। সেসময় ক্লিনিকের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা সালমা আক্তার সুমনের কাছে চিকিৎসকের ৪০০ টাকা ভিজিট চান। এতে ক্ষিপ্ত হন সুমন। এক পর্যায়ে সালমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা শুরু করে সুমন। পরে ঘটনাস্থলে এগিয়ে ক্লিনিকের একজন আশিষ সাহার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন সুমন।
চিকিৎসক দেখানের ভিজিট না দিয়েই ক্লিনিকের মালিককে ভয় ও হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান সুমন। বিকেলে ছয়টার দিকে ওই ক্লিনিকে চিকিৎসক দেখাতে যান সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল। বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে সুমন সঙ্গে ২০-২৫ জন লোক নিয়ে ওই ক্লিনিকে যান। সুমনের নেতৃত্বে লোকজন ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক সালমাকে তুলে নিতে এগিয়ে যায়। তখন ঘটনার প্রতিবাদ করে বাঁধা দিতে গেলে সুমনের নেতৃত্বে লোকজন সাংবাদিক বিশ্বজিতের ওপর হামলা চালায়। বিশ্বজিৎকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তার কাকাতো ভাই শান্ত পাল ও আনন্দ পালকেও তারা মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হামলায় বিশ্বজিৎ মাথাসহ সারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
আহত সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ক্লিনিক থেকে সুমন ও তার দলবল একটি মেয়েকে তারা তুলে নিতে আসে। আমি তখন নিজেকে ওই মেয়ের অভিভাবক হিসেবে পরিচয় দেই। তারা আমাকে তখন বলে তুই গার্ডিয়ান, দাঁড়া। এই বলে তারা আমার ওপর হামলা করে। রাধানগর মোড়ে থাকা আমার দুই ভাই ঘটনা শুনে আমাকে বাঁচাতে আসে। তাদের ওপরও সন্ত্রাসী কায়দায় তারা হামলা চালিয়েছে। বিশ্বজিৎ পাল আরো বলেন মামলা হয়েছে প্রধান আসামী সুমন ও তার বাবাকে গ্রেফতার করেছেন, এবং বাকি আসামী দেরকে গ্রেফতার এর প্রক্রিয়া চলছে জানান পুলিশ।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখে এসেছেন। এঘটনার মামলার দুজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকি জড়িতদের গ্রেফতারের জন্যে পুলিশের তিনটি টহল দল বের হয়েছে, খুব শীঘ্রই তারা গ্রেফতার হবেন।